প্রবাসী মানেই টাকার খনি
আপনার কাছে টাকা থাকুক আর নাইবা থাকুক, দেশ, দেশে থাকা আপনার পরিবার, আত্বিয়স্বজন, ঘরের স্ত্রী, পাড়া প্রতিবেশি, সবাই কিন্তু জানে আপনি টাকার খনি। কারন সবার মনে একটা ধারনা যে, প্রবাসী মানেই টাকার খনি।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস কোন মা, বাবা যদি স্বচক্ষে দেখতো তার আদরের সন্তান, প্রবাসের মাটিতে কত কষ্ট আর যন্ত্রনা সয়ে, কি খেয়ে, কত অমানবিক পরিশ্রম করে, প্রতিটা ডলার আয় করে। তাহলে তারা না খেয়ে থাকলেও হয়তো, তার আদরের সন্তানকে আর একটি মুহুর্তও প্রবাসে থাকতে দিতনা।
সুখের পাখি চোখের সামনে উড়তে দেখলেও, প্রবাসীদের তা ছুয়ে দেখা হয়না কখনই, জীবন নিয়ে হাজার স্বপ্নের ছবি আকলেও, তাতে রং মাখা হয়না কখনই, তাইতো প্রবাসীর জীবন আর স্বপ্নগুলো সাদা'কালোই থেকে যায় যোগ যোগ ধরে।
হাতে গুনা দু'একজনের জীবনী ভিন্ন হলেও প্রায় সব প্রবাসীর গল্প'টাই সেম।
সবার জীবনে সৌরভ ছড়িয়ে দেওয়া প্রবাসীর, নিজের জীবন'টাই কাগজের ফুলের মত, শুভাস আর মধু হীন। চাহিদা আর ইচ্ছে পূরনের বাধ্য'বাধকতার কাছে, হেড়ে যায় সঞ্চয় নামের সোনার হড়িণ।
এটা নেই, সেটা নেই, এটা লাগবে, সেটা লাগবে, এটা দাও, সেটা দাও।
অনেকেতো ভাবে, প্রবাসে টাকা বাতাসে উড়ে, প্রবাসীরা শুধু ধরে ধরে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
আর তাইতো, প্রবাসীর রক্তক্ষয় করা টাকায় গড়া বাড়িতে, নিজের মাথা গুজার ঠাই হয়না। প্রবাসীর টাকায় দেশে থাকা অনেকেই গাড়ি বাড়ি করলেও, দেশে ফিরে সেই প্রবাসীকেই ধার দেনা আর লোন করে চলতে হয়। কারন সবাই ভাবে, প্রবাসী মানেই টাকার খনি, দেশে ফেরার সময় ব্যাগ ভর্তি করে টাকা নিয়েই সে দেশে ফিরবে।
চাহিদার অতিরিক্ত কখনোই দিতে নেই, তবে হাতটা বড় হয়ে যায়, আর একবার হাত বড় হয়ে গেলে, পরে সামলানো মুশকিল। তাই যে, যাই করেন, একটু ভেবে চিন্তে করবেন, পরিবারের চাহিদা'টা নাগালের মধ্যে রাখবেন। দেশে গিয়ে চলার মত, হাতটা শক্ত রাখুন।
সুমন সিকদার,
সিঙ্গাপুর প্রবাসী।