স্বাধীনতার অমূল্য বানী - মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম

0
স্বাধীনতার অমূল্য বানী
মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
===============
আমি অবাক হয়ে যাই,
কি করে এখনো ওদের গায়ে পাকি প্রেতাত্মা ভর করে,
একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ হলে কি কেউ ভাবতে পারে
পাকিস্তান তার জান,
পাকিস্তানের জন্যে সে হতে পারে কোরবান।
ঘৃণায় আমি কুৎসিত হয়ে যাই,
যখন দেখি কিছু কুসন্তান
বাংলার জমিনে ঘুমিয়ে স্বপ্নে পাকিস্তান দেখে
আমি নিশ্চিত,
এবং আমি শুধু নিশ্চিত নই,
ল্যাবরেটরিতে পরিক্ষা করে দেখ
ওদের গায়ে এখনো বহে পাকি রক্তের বান,
তাই ওদের থেকে সকলে হয়ে যা সাবধান
আমি লজ্জায় লাল হয়ে যাই,
কি করে কোন মানুষ স্বাধীনতার এতো বছর পর
শহিদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে?
একটি মীমাংসিত বিষয়,
এনিয়ে কি কোন সংশয় থাকতে পারে?
এ কি সংশয়? না কি ভীমরতি ?
না কি বেহায়াপনা ?
না নাহ, এ কোন সংশয় নয়,
এ কোন ভীমরতি বা বেহায়াপনাও নয়,
শহিদের নিয়ে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করে,
ওরা মুক্তিযুদ্ধ চায় নি,
ওরা দেশের স্বাধীনতা চায়নি,
ওরা যে এখনো স্বাধীনতা চায়না
ওদের বক্তব্যেই তা পরিষ্কার
ওরা পাকিস্তানি রক্তে গড়া মানুষ নামের কিট,
ওদের সাথে আমাদের নাই কোন রিট,
যারা এদেশ চায়নি তাদের তো এদেশে থাকারই অধিকার নাই,
আমি নির্বাক হয়ে যাই,
যখন নব্য রাজাকাররা বলে বংগবন্ধু নাকি এদেশের স্বাধীনতা চায়নি!
আমি অবাক হয়ে যাই,
যখন নব্য মির্জাফররা বলে বংগবন্ধু নাকি পাকিবন্ধু!
আমি আশ্চর্য হয়ে যাই,
যখন নিমকহারামরা বলে যার কোন অবদান নাই
তাকেই নাকি জাতিরপিতা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে
ছোট্ট একটি কথা মনেপরে গেল,
এক ছেলে পিতাকে বলছে,
বাবা তুমি কোথায় বিয়ে করেছো ?
পিতা বলছে, তোমার নানার বাড়িতে,
ছেলে বলছে, বাবা তুমি একটা বোকা,
বাবা বলছে, কেন?
ছেলে বলছে, তুমি যদি অন্য বাড়িতে বিয়ে করতে
তাহলে আজকে আমাদের একটা ইষ্টিবাড়ি বেশি থাকতো
আমি হাসবো না কাঁদবো? বুঝিনা,
আজকে ওরা যদি ছোট বাচ্চার মত কথা বলতো তবু মনকে বুঝানো যেত,
ওরা ছোট বাচ্চার চেয়েও অধম,
তাই, শুধু বলি, ওই শয়তানের দল,
তোমরা শুনতে পাওনা সেই ভাষণ?
যে ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ,
যে ভাষণে শয়তানদের আত্না কেঁপে উঠেছিল,
যে ভাষণে ছদ্মবেশী পাক দালালের অন্তরে কাঁপন ধরিয়েছিল,
যে ভাষনে মানুষরূপী শয়তানের আজো দিশেহারা হয়,
যে ভষনে, বাঙ্গালীর মুক্তির কান্ডারি বলেছিলেন,
“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।”
তোমাদের কি ইচ্ছা জাগেনা,
স্বাধীনতা সংগ্রামের এই অমিয় বানি শুনতে?
তোমাদের কি মনে চায়না,
মহাপুরুষের সেই স্বাধীনতার অমূল্য বানী শুনতে?
তোমাদের কি সাধ হয়না,
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাংগালীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ শুনতে?
তোমাদের কর্ণকুহরে কি আল্লাহতালা সিসার ঢালাই করে দিয়েছেন?
এতকিছুর পরও আমার আঁখিযুগল স্নিগ্ধতায় ভরে যায়,
যখন দেখি, এতদিন পরে হলেও বিচারের রায় আসে
পথভ্রষ্ট সৈনিকের অপকর্মের দ্বারা গঠিত দলের শাসন অবৈধ,
আর এই অবৈধতার গ্লানি সইতে না পেরে ওরা যা খুশি তাই বলছে,
যা খুশি তাই বলার নাম কি স্বাধীনতা?
স্বাধীনতার মানে কি আমার দেশের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা?
স্বাধীনতার মানে কি ৩০লক্ষ শহিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো?
স্বাধীনতার মানে কি বঙ্গপিতাকে অস্বীকার করা?
স্বাধীনতার মানে কি মানুষ পোড়ানো ?
স্বাধীনতার মানে কি ভাল না লাগলেই শহিদমিনার ভাংবো?
স্বাধীনতার মানে কি পতকা পুড়াবো?
যা খুশি তাই করার নাম স্বাধীনতা হতে পারেনা।
অতএব, জাগো বাংগালি জাগো,
এখনো সময় আছে জাগো
ছদ্মবেশী পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে জাগো।
নইলে ওরা কিন্তু ঠিকি বলবে,
৭১ এ যা হয়েছে ওটা কিছু নয়,
যা হয়েছে তা ভুল বুঝাবুঝি মাত্র,
এবং ওই ভুল বোঝাবুঝিতে কোন হতাহতই হয়নি।
তাই, ছদ্মবেশী পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে আমরা যদি না জাগি,
আমাদেও শহিদের রক্তের সাথে বেঈমানি হবে,
এই বেঈমানির কোন মাফ নেই,
কোন একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।
তাই শুনো বাংগালি শুনো,
এসো নিজেকে বিচারের কাঠগড়ার দাঁড় করানোর আগেই
ঐ ছদ্মবেশী পাকিস্তানী বেঈমান, মিরজাফরদের
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাই।
মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
সিংগাপুর
মার্চ-২০১৬

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)