ঘুরে আসতে পারেন মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নে অবস্থিত বালিয়াটি প্রাসাদ থেকে।
পুরাকীর্তির ইতিহাসে বালিয়াটির জমিদারদের অবদান উল্লেখযোগ্য।
খ্রিষ্টীয় উনিশ শতকের দিকে তৎকালীন মানিকগঞ্জের অন্যতম ধনকুবের বালিয়াটির জমিদার গোবিন্দ রাম সাহা। তিনি ছিলেন খ্রিষ্টীয় আঠার শতকের মাঝামাঝি সময়ের এক জন বড় মাপের লবণ ব্যবসায়ী।
দধী রাম, পণ্ডিত রাম, আনন্দ রাম এবং গোলাপ রাম নামে চার পুত্র রেখে তিনি মারা যান। সম্ভবত বালিয়াটি প্রাসাদটি তাদেরই নির্মিত।
৫.৮৮ একর জমির ওপর বিস্তৃত এই নিদর্শনটির ভেতরে বিভিন্ন পরিমাপ ও আকৃতির দু’শতাধিক কোঠা রয়েছে।
উত্তর দিকে রয়েছে ছয় ঘাট বিশিষ্ট একটি পুকুর। এছাড়া ভেতরে রয়েছে সাতটি খণ্ডে বিভক্ত বিভিন্ন স্থাপনা, স্নানাগার, প্রক্ষালনকক্ষ প্রভৃতি।
পুরো অংশটির চারদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। দক্ষিণ প্রাচীরে পাশাপাশি একই ধরনের চারটি খিলান দরজা রয়েছে। প্রতিটির ওপর রয়েছে একটি করে সিংহ।
স্থাপনাসমূহের আকর্ষণীয় দিক হলো সারিবদ্ধ বিশাল আকৃতির করিনথিয়ান থাম, লোহার বীম, ঢালাই লোহার পেচানো সিড়ি, জানালায় রঙ্গিন কাচ, কক্ষের অভ্যন্তরে বিশাল আকৃতির বেলজিয়াম আয়না, কারুকার্য খচিত দেয়াল ও মেঝে ঝাড়বাতি ইত্যাদি।
বালিয়াটির প্রাসাদটি বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক ১৯৬৮ সনের এন্টিকুইটি এক্টের ১৪ নং ধারার আওতায় সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত হচ্ছে।
পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় স্থাপনার দ্বিতলের একটি অংশে জাদুঘর এ সংগৃহীত বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি অধিগ্রহণ করে। এ পরিবারের বংশধর বাবু কিশোরী লাল রায় ঢাকার জগন্নাথ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকার গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ বা সরাসরি সাটুরিয়া যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে। সাটুরিয়া পৌঁছে সেখান থেকে রিকশা বা লোকাল সিএনজিতে করে জমিদার বাড়ি যাওয়া যাবে।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রোববার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।
তথ্য সূত্রঃ https://www.daily-bangladesh.com/প্রসিদ্ধ-বালিয়াটি-প্রাসাদ/24334