অসমাপ্ত
প্রেম
মোঃ
সৈকত
❑
প্রথম
পর্ব
❑
সেদিন ছিল শনিবার। তারিখটা ছিল একত্রিশে ডিসেম্বর দুই হাজার ষোল। আমরা
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করে খাগড়াছড়িতে পৌছেছি মাত্র। খাগড়াছড়িড় যে বাড়িতে আমরা উঠেছিলাম
সে বাড়িতে পৌছা মাত্রই আমার চোখ দুটো জুড়িয়ে গেল এক অপরুপা সুন্দরী মেয়েকে দেখে। আমি
হতবাক হলাম প্রথমেই। কারণ হিলটেক্সে এতো সুন্দরী মেয়ে থাকতে পারে আমি কখনো কল্পনা
করিনি । কল্পনা না করার কিছু কারণ আছে। প্রথমত আমি জানতাম পাহাড়ি এলাকায় শুধু উপজাতিরা
বসবাস করে যেমন, চাকমা, মারমা, গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা, মগ ইত্যাদি। কিন্তু সেখানে
যে বাঙ্গালীরাও বসবাস করে এটা আমার জানা ছিল না। ওখানে বাঙ্গালীদের অবস্হা দেখলে মনে
হবে এটা সমতল এলাকা। হিলটেক্সে এতো বাঙ্গালী কল্পনাতীত। দ্বিতীয় কারনটা হচ্ছে আমি
ওখানে গিয়েছি আরো দুদিন আগে এই দুই দিনে ওখানকার অনেক যায়গায় ঘোড়াঘুড়ি করেছি কিন্তু
এতো সুন্দরী মেয়ে আমি একটাও দেখিনি । অবশ্য এটা ঠিক যে, সুন্দরী মেয়ে আছে তবে কারো
নাক বোঁচা, চোখ ছোটো, ঠোট মোটা, গাল ফোলা ইত্যাদি। এটা হওয়ার অবশ্য কারন আছে তা হচ্ছে
যায়গাটাতো আর আমাদের বগুড়া নয় ওটা হিলটেক্সে। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি বৈচিত্র ও ওখানকার
ভৌগোলিক পরিবেশ ওখানকার লোকজনের এমন শারীরিক গঠনের জন্য উপযোগী। তবে ওখানকার বাঙ্গালীরা
আমাদের সমতলের বাঙ্গালীদের মতোই। তফাতটা শুধু ওদের চলিত ভাষার মধ্যে। ওদের চলিত ভাষা
আমরা সমতলের বাঙ্গালীরা একটাও বুঝতে পারবো না। তবে যারা শিক্ষিত বা যারা পাঠ্যপুস্তকের
ভাষায় কথা বলে তাদের কথা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না। আর তৃতীয় কারণটি হচ্ছে হিলটেক্সের
চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা মেয়েদের দেখে দেখে আমার চোখ ঝালাপালা হয়ে গেছে সুন্দরী
তেমন কোন মেয়ে আমার চোখেই পরছে না তাই আমি একরকম ভেবেই নিয়েছি এদিকে তেমন সুন্দরী মেয়ে
নেই। কিন্তু উনত্রিশ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমার সকল জল্পনা কল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে নতুন
একটা ক্ষণের আবির্ভাব হলো যেই সময়ের কথা আমার মনে থাকবে সারা জীবন। কারণ আমি সেদিন
সন্ধ্যায় পূর্ণিমা হওয়া চাঁদকে মাটিতে দেখেছিলাম ।
ঘটনাটা যেভাবে ঘটলো - আমরা শুক্রবার সারাদিন রাঙ্গামাটি ঘুরে সেখানকার অভিজাত একটি হোটেলে রাত্রীযাপন করলাম। এয়ারকন্ডিশন রুম আমরা শিতের প্রকোপ বুঝতেই পারলাম না। যাইহোক,শনিবার সকালে উঠে নাস্তা করে আমরা আরো কয়েক যায়গায় ভ্রমণ করে সন্ধ্যায় আবার খাগড়াছড়িতে এসে পৌঁছলাম। বাড়িতে পা রাখতেই দেখি চাঁদের মতো সুন্দর একটা মেয়ে উঠানে চেয়ারের উপর গা এলিয়ে বসে আছে। আমি প্রথমেই একটু ভয় পেলাম কারণ লোকমুখে শুনেছি পরীরা নাকি এরকম সন্ধ্যাবেলায় মানুষের রুপ নিয়ে গা এলিয়ে বসে থাকে। কিন্তু যখন দেখলাম মেয়েটি আমাকে দেখা মাত্রই চেয়ার থেকে উঠে মুচকি হেসে ঘরের দিকে দৌড় দিলো তখনি আমি বুঝলাম যাক এটা তাহলে পরী টরী নয় মানুষ। আমি শুধু ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়েই থাকলাম।

