আমি
ও আমার মন
শাহীন
আকবর
❑
আগেই
বলে রাখি এটা আমার মন খারাপের কথামালা। হাসির কিছু নাই। আপনি সব সময় হাসিতে থাকতে চাইলে
এটা এড়িয়ে যেতে পারেন।
মন
খারাপ কেন? সেটা জানি না। এরকমটা প্রায়ই হয়। মন খারাপ, ইচ্ছে করে দেয়ালে মাথা ঠুকি!
কিন্তু কি হইছে নিজেই বুঝি না।কারন আমার মন খারাপ। আকাশেরও মনে হয় মন খারাপ। আমার ঘরের
সামনে ছোট্ট একটা উঠোন আছে। সেখানে দাঁড়িয়ে আঁকাশ দেখছি। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। মেঘগুলা
বড্ড অলসভাবে ধীরে ধীরে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা মেঘ চাঁদটাকে
ঢেকে রেখেছে।খুব করে চাইলাম চাঁদটাকে দেখতে। হঠাৎ চাঁদ মেঘ ফুটো করে আমার চোখের সামনে
দৃশ্যমান হলো। কয়েকটা ছবি তুলে রাখলাম। মোবাইলের মিউজিক অংশে চলছে রবীন্দ্র সঙ্গীত।
উঠোনে
দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখা আমার বাচ্চাকালের স্বভাব। যখন আমার বয়স তিন তখন থেকেই চাঁদ দেখতাম
গ্রামের উঠানে শীতল পাটিতে শুয়ে শুয়ে। সাথে থাকতো বাবা, বড় আপারা,ফুফু আরও অনেকে। আর
থাকতো আমার মা। তারা আমাকে সহ আরো কিছু বাচ্চাকাচ্চাকে কিচ্ছা শুনাতো। সোনার কাঠি রূপার
কাঠির কিচ্ছা, পিঠা গাছের কিচ্ছা, পান্তা ভাত চোর ও বুড়ির কিচ্ছা, চাঁদের বুড়ির কিচ্ছা।
ছোট
বেলায় তাদের কিচ্ছা শুনে আমি ভাবতাম সত্যিই চাঁদে কোন বুড়ি আছে। আর বুড়ির মনে অনেক
দুঃখ। সে মনের দুঃখে সুতা বানায়। তার মনে কি দুঃখ সে প্রশ্ন কখনো করা হয় নাই। ছোট বেলার
স্মৃতি মনে করে মন ভালো করা যেত। কিছুক্ষন কিচ্ছা শুনার পরই মা খাওয়াতে নিয়ে যেতেন।
ভাত এক নেলা মুখে দিয়েই এই উঠোন থেকে ঐ উঠোনে দৌঁড়াতাম। সাথে দৌঁড়াতো চাঁদমামা। কি
অদ্ভুত ভালো লাগতো তখন! আমিও হাঁটি চাঁদও হাঁটে!
এখন
আর মন ভালো হয় না শৈশব চারন করে। কারন শৈশবে বাবা ছিলো। এখন বাবা নেই। শৈশবে কথায় কথায়
যখন ভূত পর্ব চলে আসতো তখনই কাম সারছে! কে কিভাবে ভূত দেখছে! কয়টা দেখছে! কোন বাগানে
দেখছে! মাছ খাইতে দেখছে! গাছে বইসা থাকতে দেখছে সব চইলা আইতো! ভয়ে গুটিশুটি মেরে শুনতাম।
ভালো লাগতো আবার ভয়ও লাগতো! মায়ের পাশে থাকতাম। মায়ের কাপড় ধরে বসে থাকতাম!
মন
নিয়ে কতকথা বলছি। সত্যিই আমার মন খারাপ! লেখা পড়ে মনে হতে পারে আমি স্মৃতিচারণ করছি।
হয়তো করছি তবে সেটা মন ভালো করার জন্য।
আমার
ভীষন মন খারাপ। একদিনে সব কথা লেখা যাবে না। আবার লিখবো। লেখাতেই শুধু একটু শান্তি
পাই। আর শান্তি পাই আকাশ দেখতে, রাতের আকাশ, মেঘলা আকাশ, চাঁদের বুড়ির আকাশ।
❑
ভাদেশ্বর,
গোলাপগন্জ,সিলেট।

