কঙ্কাল
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে )
2005 সাল। গ্রামের স্কুল থেকে আমি তখন সবে এসএস, সি পাশ করেছি। মোটামুটি একটা ভালো রেজাল্ট নিয়ে। ঘটনাচক্রে খুলনায় ভর্তি হলাম একটা নাম করা মহিলা কলেজে।এবং কলেজের হোস্টেলে সিট পেলাম। আমরা ছিলাম ঐ হোস্টেলে র প্রথম ব্যাচ। অধিকাংশ মেয়েরাই ছিল গ্রামের।। যাই হোক হোস্টেল টি ছিল চার তলা ভবন।আমি দোতলায় সিট পেয়েছিলাম। আমাদের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করার জন্য একজন আপা(মেট্রোন আপা) ছিলেন। তিনি নিচতলায় থাকতেন।। কিছু দিন ভালো গেলো। নতুন জায়গা।। এর মধ্যে এক দিন শুনতে পেলাম ছাদে গড় গড় করে ঠক ঠক করে শব্দ হচ্ছে।। দোতলার মেয়েরা ভাবছে তিনতলার মেয়েরা শব্দ করছে। তিন তলায় মেয়েরা ভাবছে চারতলার মেয়েরা করছে।। এভাবে একের পর এক দোষারোপ চলতে থাকলো। কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে নালিশ গেল।। তিনি তদন্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিলেন। তিন জন আংকেল পাহারা দিতেন রাতে। তারা কোন কিছু খুঁজে পেলেন না। শব্দের মাত্রা দিন কে দিন বেড়েই যাচ্ছিল। নাইট গার্ড রা ছাদে গিয়ে লাইট মেরে দেখেও কিছু ই পেতেন না। একদিন খুব ভয়ানক ঘটনা ঘটলো। কারেন্ট চলে যাওয়ায় আমরা সবাই আই ,পি,এস লাইটের নিচে এসে পড়ছিলাম। প্রতি তলায় একটি করে লাইট সেট করা ছিল। এর মধ্যে এমন ভয়ানক শব্দ হলে যা আমরা কল্পনা ও করতে পারি না। (কেউ যেন বড় একটা নোড়া ছাদের এক মাখা থেকে আরেক মাথায় গড় গড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মেয়েরা হতভম্ব গেল।অনেকেই ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিল।। কেউ কেউ দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো। মেট্রন আমি ও ভয় পেলেন।।।।
যাই হোক এর পর শোনা গেল এই বিল্ডিং করার সময় অনেক কঙ্কাল পাওয়া গেছে।। নাম না জানা অনেক শহীদের কবর ছিল ।
এরপর হুজুর ডেকে মিলাদ দেয়া হয়।। পূজারী ডেকে পূজা দেখা হয়।।। আস্তে আস্তে সমস্যা র সমাধান হয়।। দুই বছর হোস্টেলে ছিলাম।। আর এ রকম কোন সমস্যা হয় নি।।।
দিন গুলোর কথা মনে পড়লে এখনো ভয় লাগে।।।
রেখা দাস

