ভূতের হাত
এক দেশের এক শিক্ষকের কথা বলছি। স্কুল শেষে তিনি সাইকেলে চালিয়ে টিউশনি করতে যান। তার যাবার পরিবেশটা ছিল এইরকম দুইদিকে পাহাড় মাঝখান দিয়ে একেঁবেঁকে সরু রাস্তা। একদিন টিউশনিতে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন, তার সাইকেলের সামনে স্বর্ণের মত ঝলমলে একটি খণ্ড পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ল। তিনি এটা তুলে পান্জাবীর পকেটে রাখেন এবং পুনরায় সাইকেল চালাতে শুরু করেন।একটু যেতে না যেতেই তিনি বুঝতে পারেন তার জামার পকেটটি খুব ভারী লাগছে তৎক্ষনাৎ তিনি সাইকেল থেকে নেমে পকেটে থেকে খণ্ডটি বের করতে যাবেন দেখেন, না, না এটা কোন খণ্ড নয় আঙ্গুল সমেত একটি কাটা হাত। তিনি ভয়ে টুকরো হাতটি ফেলে দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা ধরে সাইকেল চালাতে থাকলেন। তার শরীর কাঁপছে বারবার চোখের সম্মুখে ভেসে উঠছে হাতের টুকরোটী।ভয়ে তিনি প্রচুর ঘামছেন তার শরীর নিস্তেজ লাগছে। শিক্ষক মহোদয় গন্তব্যে পৌঁছলেন।
তার এমন ভয়কাতুরে অবস্থা দেখে ছাত্রের বাবা এগিয়ে এলেন এবং তার কি হয়েছে কেন এত ভয় পেয়েছেন তার শরীরটা কেনো কাঁপছে,বিনীত ভাবে জানতে চাইলেন। শিক্ষক ঘটনাটি বলা শেষ করতেই ভদ্রলোক পকেট থেকে একখানা অর্ধ কাটা হাত দেখিয়ে বললেন দেখেন তো এটা নাকি? শিক্ষক অ মা গো ও মাগো ভূত ভূত বলে দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। বেহুশের মতো সাইকেল চালাতে লাগলেন।চালাতে চালাতে তার বাড়ির নিকটবর্ত্তী বাজারে এসে কোনমতে সাইকেল থেকে নেমে আর ঠিক থাকতে পারলেননা মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।
একটু সুসথতা বোধ করলে পরিচিত লোক জন তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। তাকে এ অবস্থায় দেখে তার মা,বাবা,ভাই,বোন স্ত্রী সবার কান্না এলো।সবাই তাকে ঘিরে বসলো এবং কি হয়েছে জানতে চাইলো।শিক্ষকের মন এবার শান্ত হতে থাকলো।আপন নীড়ে তিনি এখন নিরাপদ তা ভাবতে ভাবতে সকল ঘটনা বলতে লাগলেন।কথা বলা শেষ করতেই সকলে একসুরে বলে উঠলো দেখতো এই হাত নাকি? তিনি দেখেন সকলের হাতেএকটি করে আঙ্গুল সমেত হাতের টুকরো। এরপর তিনি আর কিছু বলতে পারেন না।জ্ঞান ফিরে আসলে বুঝতে পারেন তিনি কোন ক্লিনিকে আছেন।
সুমিতা দত্ত কানুনগো

