বিড়াল আর কুকুর

0



বিড়াল আর কুকুর

হাজেরা বেগম

এক বাড়িতে বিড়াল আর কুকুর বাস করতো।

বিড়াল ঘরে থাকতো আর কুকুর বাইরে থাকতো।

কিন্তুু দুজনের কখনই বনিবনা ছিলোনা।

একজন অন্য জনকে দেখলে তিরস্কার করতো।

বিড়াল একটু বাহির হলে কুকুর যখন দেখতো ওকে এক দৌড়ানি দিতো বিড়াল ভয়েও কুকুরের সামনে দিয়ে যেতোনা।

বিড়াল নিজকে মহা সুখী ভাবতো আর কুকুরকে বলতো আমি গিরস্তের ঘরে থাকি আরামে ঘুমাই তাদের ঘাটে, আর ভালো ভালো খাবার খাই সবার সাথে, আর তুমি বাইরে থাকো মানুষ তোমাকে দূর দূর করে থাকে ভালো মতো খাবার পাওনা পচা নোংড়া খাও এই বলে তিরস্কার করে বিড়াল।কিন্তু কুকুর রাগে দুঃখে বলে তুই গিরস্তের কি উপকার করিছ?

চুরি করে খাবার খাস আর না ডেকে ঘুমাস।

আমি সারা রাত না ঘুমিয়ে মালিকের বাড়ি পাহাড়া দেই যাতে চোর ডাকাত তাদের কোন ক্ষতি না করে!

এই বলে কুকুর বিড়ালকে দেখলেই তাড়া করে আর বিড়ালও সুযোগ পেলেই কুকুরকে লেজ নাড়িয়ে মুচকি হেসে পালিয়ে যায়।

এই ভাবে কিছু দিন চলার পর কেউ আর কাউকে আগের মতো ঝগড়া ঝাটি করে না দুজনই চুপ চাপ হয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেলো।

কুকুর বাড়িতেই ছিলো বিড়াল অন্যত্র চলে গেলো।কুকুর আর বিড়ালকে দেখতে পেলোনা।অনেক দিন পর বিড়াল আবার ফিরে আসলো। কুকুর দেখতে পেলো বিড়ালটা রোগেশোকে একে বারেই মন মরা, মনে তাঁর ভীষন কষ্ট!

বিড়ালও দেখলো কুকুরটা আর আগের মতো নেই, ওর মনেও অনেক কষ্ট!

এবার দুজন এক সাথে বসলো, বিড়াল বললো বাচ্চা পেটে নিয়ে চলে গেলাম দূরে মনে করছিলাম সেখানে নিরাপদ হবে, কই আমরা অবলা প্রানী আমাদের নিরাপত্তা কোথায়ও নেই।

চারটি বাচ্চা জন্ম দিলাম, এখান থেকে ওখানে মানুষের বাচ্চার ভয়ে কয়েক দিন পালিয়ে বেড়ালাম তবুও রক্ষা পেলামনা।

কে কোথায় নিয়ে গেছে তার কোন সন্ধান পাই না।মা হয়েও বাচ্চা গুলোকে দুধ খাওয়াতে পরিনী। বলো মায়ের মন কেমন করছে?

তখন কুকুরও দুঃখ প্রকাশ করে বললো আমারও তিনটে বচ্চা হলো একটি রোড একসিডেন্টে মারা গেলো আর দুটি বাড়ির দুষ্ট পোলাপাইনে কই নিয়ে যে ফেলে দিলো তাও জানিনা।

আমাদের দুঃখ কষ্ট কেউ বুঝেনা। কেউ শুনেনা আমাদেরও যে একটা মন আছে ভালোবাসা আছে মায়া মমতা আছে।এই জন্যইতো এই সভ্য সমাজে আমরা বড়ই বেমানান।চলো আজ থেকে আমরা দুজন বন্ধু,সুখে দুখে দুজন দুজনার পাশে থাকবো।।।

Moshamud Hazera Bagum

 

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)